বাংলাদেশের গ্রাম কিংবা শহর—সবখানেই একটা প্রচলিত ধারণা রয়েছে, খুব অসুস্থ পশুর মাংস খাওয়া ঠিক নয়। বিশেষ করে যখন মনে হয়, পশুটি আর বেশিদিন বাঁচবে না, তখন এমন পশু জবাই করে খাওয়া নিয়ে অনেকের মনে দ্বিধা তৈরি হয়। তবে ইসলাম কি বলে এ বিষয়ে? 🤔 শরীয়তের দৃষ্টিতে অসুস্থ পশুর মাংস ইসলামী ফিকহবিদদের মতে, সব ধরনের অসুস্থ পশুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ নয়। বরং এর ধরন ও মাত্রার ওপর ভিত্তি করে আলাদা বিধান রয়েছে। চলুন দুই ধরনের অসুস্থতা নিয়ে জেনে নেওয়া যাক👇 🩺 ১. মারাত্মক রোগে আক্রান্ত পশু যে ধরনের অসুস্থতা প্রাণীটির মাংসে এমন বিষক্রিয়া বা ক্ষতিকর উপাদান তৈরি করে, যা মানুষের শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ—এমন পশুর মাংস খাওয়া থেকে ইসলাম বিরত থাকতে বলেছে। বিশেষ করে, যদি কোনো বিক্রেতা অসুস্থতার বিষয়টি গোপন রেখে মাংস বিক্রি করে, তবে তা ‘আলগারার’ ও ‘আলখিদা’ অর্থাৎ প্রতারণার শামিল হবে, যা শরীয়তে স্পষ্ট হারাম। 🛑 🍖 ২. হালকা বা সাধারণ অসুস্থতা যদি কোনো পশুর সাধারণ অসুস্থতা হয়, যা তার মাংসে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না এবং তা খাওয়ায় মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে না, তাহলে এমন পশুর মাংস খাওয়া ইসলাম সমর্থন করে। এমন পশু জবাই করা বা বিক্রি করাও সম্পূর্ণ বৈধ✅ ইসলামী গ্রন্থের দলিল এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থের বক্তব্য: 📚 আলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশায়েখ (পৃ. ৪৬৯) 📚 তাবয়ীনুল হাকায়েক (৬/৪৭২) 📚 আলমুহীতুল বুরহানী (৮/৫৫) 📚 ফাতাওয়া হিন্দিয়া (৫/২৮৬) 📚 আদ্দুররুল মুখতার (৬/৩০৮) ⚠️ ক্রেতা ও বিক্রেতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ✅ অসুস্থ পশু বিক্রি করার আগে তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে ক্রেতাকে পরিষ্কার জানাতে হবে। ✅ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি জরুরি। ✅ অস্বাস্থ্যকর ও ঝুঁকিপূর্ণ পশু জবাই ও বিক্রি বন্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। 📲 আরও পড়ুন 🔗 পশু জবাইয়ের সঠিক নিয়ম ও ইসলামিক বিধান 🔗 হালাল খাদ্যের চিহ্নিতকরণ ও বাজারে মান নিয়ন্ত্রণ 🔗 কুরবানির পশু নির্বাচনের ইসলামী গাইডলাইন