ঢাকা | রবিবার, ২৯রা জুন ২০২৫

ঐতিহ্যের সাক্ষী জাহাপুর জমিদার বাড়ি: চারশো বছরের ইতিহাসের ধারক 🏰✨

মুরাদনগরের জাহাপুর ইউনিয়নে অবস্থিত জাহাপুর জমিদার বাড়ি আজও ইতিহাসের এক জীবন্ত সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। ১৮৬২ সালে গৌরি মোহনের হাত ধরে জমিদারির গোড়াপত্তন হয় এই বাড়িতে। তবে এর আগে থেকেই জমিদার বংশধররা প্রায় চারশো বছর ধরে এখানে বসবাস করে আসছেন। জমিদারি প্রথার বিলুপ্তি ঘটলেও, এই স্থাপনা এখনও ঐতিহ্য ও ইতিহাসের মহিমায় উজ্জ্বল। 🌿🏡 জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা গৌরি মোহনকে সহায়তা করেছিলেন তার দুই ভাই রাম দয়াল ও কমলা কান্ত। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই জমিদার বাড়ি রূপ নেয় সমৃদ্ধ পাট ব্যবসার কেন্দ্রস্থলে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাটের ব্যবসা করে এই জমিদার পরিবার বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক বনে যান। জমিদার বাড়ির স্থাপত্য ও স্মৃতি: বাড়িটির ভেতরে এখনো রক্ষিত আছে জমিদারদের ব্যবহৃত আসবাবপত্র। জমিদার বংশের প্রতিটি সদস্যের নাম তাদের শ্মশানে স্থাপিত সমাধি ফলকে উল্লেখ আছে। গৌরি মোহন রায়, রামকৃষ্ণ রায়, রাম মোহন রায়, অশ্বিনী কুমার রায় এবং গীরিশ চন্দ্র রায়ের মতো বিখ্যাত জমিদারদের নাম আজও সবার মুখে মুখে। জমিদারদের স্ত্রীদের মধ্যে রাণী নন্দ রাণী, মহামায়া রায় ও শ্যামা সুন্দরী দেবীর নাম উল্লেখযোগ্য। তারা বাড়ির সামনে থাকা পুকুরে জাফরান মিশিয়ে গোসল করতেন, যা ঐতিহ্যের এক অংশ। পুকুরটি এখনো বাড়িটির সামনে সৌন্দর্য বাড়িয়ে রেখেছে। 🏞️ বর্তমান অবস্থা: জমিদার বংশধরদের একাদশ প্রজন্মের সদস্যরা এখনও এই বাড়িতে বসবাস করছেন। শ্রী আশীষ কুমার রায়, সমরেন্দ্র রায়, অজিত কুমার রায়, প্রফেসর অঞ্জন কুমার রায় এবং অধ্যক্ষ রঞ্জন কুমার রায়সহ তাদের পরিবার এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটির দেখাশোনা করছেন। জমিদার বাড়ির ভেতরে আরও দুইটি পরিবার বাস করছেন, যারা তাদের জীবিকার তাগিদে নানা পেশায় জড়িত। পর্যটকদের জন্য আকর্ষণ: যারা ইতিহাসের টানে গ্রামীণ ঐতিহ্য আর জমিদার আমলের স্থাপনা দেখতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য জাহাপুর জমিদার বাড়ি হতে পারে আদর্শ ভ্রমণ গন্তব্য। বাড়ির প্রতিটি কোণে লুকিয়ে আছে গল্প, আছে জমিদার আমলের ঐশ্বর্যের ছোঁয়া।

প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারী, ২০২৫ এ ৭:৫৫ PM

আজকের সর্বশেষ