ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতে রয়েছেন। শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর থেকে আওয়ামী লীগ কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। এর মধ্যেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকার এবং তার সমর্থকরা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখী করতে চান। তবে ভারতের সঙ্গে আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। শেখ হাসিনা যখন দেশ ত্যাগ করেন, তখন অনেকের ধারণা ছিল যে ৭৫ বছর বয়সী এই নেত্রী নির্বাসিত অবস্থাতেই বাকি জীবন কাটাবেন। কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং তার পরবর্তী ফলাফল দেশের এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করেছে, যা তার ফিরে আসা কঠিন করে তুলেছে। তবে সম্প্রতি এই ধারণা কিছুটা ফিকে হয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাব শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে আসার সুযোগ দিতে পারে। নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোবাশ্বের হাসান বলেছেন, “বর্তমানে ক্ষমতাসীন সরকারের কোনো নির্বাচনী ম্যান্ডেট নেই। শেখ হাসিনা যদি চান, তাহলে এই দুর্বলতাকে ব্যবহার করে ফিরে আসতে পারবেন। এটি কেবল সময়ের অপেক্ষা।” যুক্তরাষ্ট্রের উইলসন সেন্টারের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যানও একই মত পোষণ করেন। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন খুবই সম্ভব। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র অবিচ্ছেদ্য অংশ।” তিনি আরও যোগ করেন, “যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হত, তবে সম্ভাবনা কমে যেত, কিন্তু রাজনৈতিক বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ এখনো বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল।”